মাসুদ পারভেজ কালিগঞ্জ থেকেঃ
মোটা অংকের টাকার প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে জেলা, উপজেলা জুড়ে কোটি কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করে রুপা এনজিও নামে একটি সমবায় সমিতির মালিক প্রতারক মনিরুল ইসলাম উধাও। টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে অফিসে অফিসে ধরনা দিয়ে মিলছে না কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সন্ধান। টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে গত সোমবার (২২ জানুয়ারি) বেলা ১১ টার থেকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের রুপা এনজিও সমবায় সমিতির অফিসে শত শত ভুক্তভোগী গ্রাহকরা প্রতিবাদ বিক্ষোভ সমাবেশ করে টাকা ফেরত পাওয়ার দাবীতে। দিন মজুরি দিয়ে কষ্টার্জিত টাকা জমা রেখে এখন ফেরত না পাওয়ায় অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে ভুক্তভোগী আমানতকারী গ্রাহকরা। রাতারাতি অফিস বন্ধ করে চলে যাওয়া এলাকায় শত শত আমানতকারী গ্রাহকের এখন মাথায় হাত উঠেছে। শুধু ফতেপুর শাখা অফিস না কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর, নলতা সমবায় সমিতির অফিস সহ জেলার প্রায় সব সহ অফিসে তালাবদ্ধ। মাঝেমধ্যে সমিতির কর্মচারী, কর্মকর্তারা ঋণের কিস্তি আদায়ের জন্য খুললেও পরক্ষণে গ্রাহকের পিটুনি খাওয়ার ভয়ে পালিয়ে যায়। সাতক্ষীরা জেলাু জুড়ে হাজার হাজার গ্রাহকের নিকট হতে মোটা অংকের লাভের ফাঁদে ফেলে কোটি কোটি টাকা জমা নিয়ে নলতায় জমি কিনেছে। পরক্ষণে সেই জমি ব্যাংকে মডগ্রেজ রেখে মোটা অংকের টাকার লোন নিয়ে ঢাকায় প্লট, বাড়ি কিনেছে বলে ভুক্তভোগীরাসাংবাদিকদের জানান। সরে জমিনে গেলে শত শত গ্রাহকরা জানান কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা শরীফ টাকিপাড়া গ্রামের মৃত গোলাম হোসেনের পুত্র ওরফে বাটাং এর পুত্র প্রতারক মনিরুল ইসলাম প্রথমে নলতায় রুপা সমবায় সমিতি নামে একটি এনজিও খুলে বসে। প্রথমে ঋণ দেওয়ার নাম করে এলাকায় নারী-পুরুষদের সদস্য সংগ্রহ করে কার্যক্রম শুরু করে। সমবায় অফিস থেকে রেজিস্ট্রেশন নাম্বার সংগ্রহ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির নাম ভাঙ্গিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলার ফতেপুর, বিষ্ণুপুর, ইউনিয়ন এলাকায় কার্যক্রম কার্যক্রম ২০০৮-৯ সাল হতে অফিস ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। শুরুতেই ১ লক্ষ টাকায় মাসে ৩ হাজার টাকা লাভের প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে গ্রাহকদের নিকট হতে সঞ্চয় আমানত সংগ্রহ করা শুরু করে। এইভাবে দীর্ঘ ১৫ বছরে গ্রাহকদের নিকট হতে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে এখন সুযোগ বুঝে মাস খানেক আগে তারা অফিসের তালা ঝুলিয়ে গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। বর্তমান গ্রাহকরা অফিসে কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে না পেয়ে হায় হায় কোম্পানির মত খুঁজে বেড়াচ্ছে। খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার শত, শত গ্রাহক প্রতিদিন অফিসের সামনে এসে বই হাতে ভিড় জমাচ্ছে এবং বিক্ষোভ সমাবেশ করছে। সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গেলেজানা যায় ফতেপুর গ্রামের মহাদেব সরদার ৫০হাজার, অনন্ত সরদার ২ লক্ষ ৩০ হাজার, জগ সরদার ৫০ হাজার, সুভাষ সরকার ৩ লক্ষ, অমিও হাজরা দেড় লক্ষ, কল্পনা হাজরা দেড় লক্ষ্, ক্ষান্ত রানি হাজরা ১ লক্ষ ৫৬ হাজার, বিদেশ হাজরা ২লক্ষ্, গুরুপদ হাজরা ৫ লক্ষ, সরপাল ৫০ লক্ষ্, দিলীপ ঢালি ২ লক্ষ, এইভাবে শত শত নারীর পুরুষ এর নিকট হতে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা সাংবাদিকদের জানান। তারা প্রথমে এসে গ্রামে গ্রামে ঋণ দেওয়ার নাম করে সমিতি গঠন করে পরবর্তীতে ১ লক্ষ টাকা জমা রাখলে মাসে ৩০০০ টাকা লাভের প্রলোভন দেখালে মানুষ টাকা জমা রাখার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে। আর এইভাবে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তাকে মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে বছরের পর বছর অপকর্ম চালিয়ে গেলেও তারা থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ ব্যাপারে এনজিও সমবায় সমিতির মালিক মনিরুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি খবরের কাগজে না দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানান। এতে তার মোটা অংকের টাকা ক্ষতি হয়ে যাবে এবং তিনি আরো সাংবাদিকদের জানান একটু সমস্যা হয়েছে আমি আবার ফান্ড পেয়ে গ্রাহকের টাকা আস্তে আস্তে দিয়ে দেব। আপনারা খবরের কাগজে লিখলে বিষয়টি জানাজানি হলে আমার টাকা দেওয়া সম্ভব হবে না। তাই আপনারা দয়া করে লিখবেন না। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে জেলা প্রশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
Leave a Reply