হাফিজুর রহমান শিমুলঃ
সুলতানুল আউলিয়া কুতুবুল আকতাব গাওছে জামান আরেফ বিল্লাহ পীর কেবলা হযরত শাহসূফী আলহাজ্জ হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) এর ১৫১তম জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষ্যে সেমিনার ও মাসব্যাপী চক্ষুসেবার সমাপনি ও কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরুস্কার বিতরণ শনিবার (২৮ ডিসেম্বর-২৪) পাক রওজা শরীফ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের সহ সভাপতি আলহাজ্ব ডাঃ আফতাবুজ্জামান এর সভাপতিত্বে সকাল ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত সেমিনারে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনিষ্টিটিউটের পরিচালক মনিরুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ। বিশেষ আলোচক ছিলেন সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডল, মূল আলোচক ছিলেন গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর এমিরেটাস ড.আনিসুজ্জামান, আলোচক ছিলেন বাংলা সাহিত্যে কথা সাহিত্যিক, প্রবান্ধিক অধ্যাপক গাজী আজিজুর রহমান ও খানবাহাদুর আহছানউল্লা ইনিস্টিউটের মহা পরিচালক এএফএম এনামুল হক। বর্তমান শিক্ষা সংস্কারে হজরত খানবাহাদুর আহছানউল্লা (রঃ) এর শিক্ষা চিন্তা ও কর্মের প্রায়োগিক বাস্তবতা প্রবন্ধ পাঠ করেণ প্রবন্ধকার অধ্যাপক ড.মো. একরাম হোসেন। তিনি বলেন, বৃটিশ শাসনামলে যখন ইংরেজি শিক্ষাকে মুসলমানরা হারাম মনে করতেন সে সময়ে তিনি শিক্ষা বিভাগের উচ্চ পদে চাকুরীতে যোগদান করেন। তিনি আরো বলেন, “ফেতনা হচ্ছে মানব হত্যার চেয়ে খারাপ”। আল্লাহতালা আমাদেরকে রাখাল করে পাঠিয়েছেন। তিনি সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাকলুকাতকে অনেক বড় করে দুনিয়ায় প্রেরন করেছেন। আমাদেরকে তা বুঝতে হবে।নসেমিনারের অন্যতম আলোচক এ এফ এম এনামুল হক (মহা পরিচালক, খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনিষ্টিটিউট) তার বক্তব্যে পীর কেবলা র. এর কর্মজীবনের বিভিন্ন কর্মকান্ডের বর্ননা দিয়ে বলেন, তিনি চাকুরী জীবনের অধিকাংশ সময় বরিশাল ও চট্রগ্রাম বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালে মুসলিম বুদ্ধিজীবিদের মধ্যে অন্যতম যুক্তিদাতা ছিলেন। তিনি মাদারজাত ওলী ছিলেন। তিনি হযরত ওয়ারেছ পাক (র.) এর নির্দেশে হযরত গফুর শাহ্ (র.) এর কাছে বায়াত গ্রহন করেন। তার জীবন ও কর্মের উপর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনার ও গবেষনা হচ্ছে। বক্তাগন বলেন, আল্লাহ যখন কোন জাতিকে ভাল বাসেন, তখন তিনি সে জাতির কাছে একজন ওলীকে পাঠিয়ে দেন। আমরা আল্লাহুর মহান নিয়ামত হিসাবে হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) কে পেয়েছি। তিনি ধর্মের মৌলিক শিক্ষা মানুষের মাঝে জাগ্রত করে গিয়েছেন। খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) ৯০ বছর জীবনে নিজের জন্য না হয়ে সকলের জন্য নিবেদিত ছিলেন। তিনি কাজ করেছেন নৈতিক, আলোকিত, জ্ঞানী, নীতিবান ও আদর্শবান মানুষ তৈরির জন্য। যে কারণে তাকে স্মরণ করা হচ্ছে, এমনিভাবে স্মরণ করা হবে কিয়ামত পর্যন্ত। আল্লাহুর ওলীদের প্রেমে যারা অবগাহিত হয় তাদের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ থাকে না, থাকতেও পারেনা। তিনি জাগতিক জগতে যেমন প্রশাসনিক স্তর রয়েছে, তেমনি আধ্যাত্যিক জগতেও প্রশাসনিক বিভিন্ন স্তর ও ধাপ রয়েছে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে পাক রওজা শরীফের খাদেম আলহাজ্জ মো: আব্দুর রাজ্জাক, কালিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুর রহমান, কেন্দ্রীয় মিশনের সহ- সভাপতি আলহাজ্জ মাষ্টার সাইদুর রহমানসহ বিভিন্ন শাখা মিশনের কর্মকর্তা, গণমাধ্যমে কর্মী ও হাজার হাজার ভক্তবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে সভাপতির সমাপনী বক্তব্যে সেমিনারের সভাপতি ও মিশনের সহ সভাপতি আলহাজ্ব ডাঃ আফতাবুজ্জামান আগত সকলকে মিশনের পক্ষ থেকে কৃতঞ্জতা প্রকাশ করেন, তিনি অনুষ্ঠানে প্রবন্ধকার সহ সকল অতিথিদের জ্ঞানগর্ভ আলোচনা উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ পেশ করেন। পরিশেষে মোনাজাত পরিচালনা করেন করেন আলহাজ্জ হাফেজ হাবিবুর রহমান ঈমাম (নলতা শরীফ শাহী জামে মসজিদ)। এর আগে মুর্শিদি গজল পেশ করেণ ফিরোজ আলম পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন হাফেজ জুবায়ের হোসেন।
Leave a Reply