শ্যামনগর প্রতিনিধিঃ সাতক্ষীরার শ্যামনগরের বহু বিবাহের হোতা মিজানুর রহমান৷ ওরফে মিজান পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি হাওয়াল ভাংগী গ্রামের মৃত আবু সুফিয়ান সরদারের পুত্র। গাজীপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরে গাড়ী চালক পদে চাকুরী করেন মিজানুর রহমান। চাকুরী সুবাদে প্রায় ৯ টি বিবাহ ও কয়েক কোটি টাকার মালিক হওয়ার অভিযোগ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। ৭ ডিসেম্বর (শনিবার) দিনগত রাতে ঢাকায় পরিবহন যোগে পালাতে গিয়ে খানপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন রাস্তায় শ্যামনগর থানা পুলিশ মিজানুর রহমান কে গ্রেফতার করেন। ৭ম স্ত্রী সোনাডাঙ্গা থানাধীন সেকেন্দোর আলীর কন্যা সুমাইয়া আকতার খুলনা বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং-৩ এ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা নং-১২৭/২৪। তাং-৩১/১০/২০২৪।যার ধারা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধিত ২০০৩ এর ১১ (গ)। বিগত ২/১১/২০২৪ তারিখে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার মামলা নং-০৫ এর- প্রেক্ষিতে সোনাডাঙ্গা মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম ও এস আই সোহেল রানা স্বাক্ষরিত শ্যামনগর থানা অফিসার ইনচার্জ বরাবরে অধিযাচন পত্র মোতাবেক মিজানুর রহমান কে গ্রেফতার করা হয়। শ্যামনগর থানায় জিডি নং-৪০১, তাং ৮/১২/২০২৪, গ্রেফতারকৃত মিজানুর রহমান কে সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মামলা সূত্রে প্রকাশ, বিগত ১৮/১১/২০২২ তারিখে ৪ লক্ষ টাকা দেনমোহরানা ধার্য্যে মিজানুর রহমানের সাথে সুমাইয়া আকতারের বিবাহ হয়। ঢাকায় ফ্লাট ক্রয়ের জন্য তার কাছে যৌতুকের জন্য ৫লক্ষ টাকার অভিযোগ উঠে। এ নিয়ে সুমাইয়া কে মারপিটের ঘটনা ঘটে। মহানগর হাকিম আমলী সোনাডাঙ্গা আদালত, খুলনায় সি আর ৯৪৮/২৪ (সোনাডাঙ্গা) যৌতুক নিরোধ-আইন ২০১৮ এর ৩ ধারায় সুমাইয়া বাদী হয়ে মিজানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলাটি উত্তোলন ও যৌতুক দাবীতে বিরোধ চরমে উঠে। মিস পিটিশন মামলা নং ১২৭/২০ ২০২৪ বিজ্ঞ আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করতঃ তদন্তপূর্বক দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সোনাডাঙ্গা খানা, খুলনা অফিসার ইনচার্জ কে নির্দেশ দেন এবং তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। তার স্ত্রী সুমাইয়া আকতার জানান, তার স্বামী মিজানুর রহমানের ৯টি বিবাহ হয়। তার স্ত্রীরা হলেন- মনোয়ারা, ময়না, মৌসুমী, রোজী, হালিমা, সুমাইয়া, নাছিমা, সুমী প্রমূখ। এর মধ্যে কয়েকজন কে তালাক দেয়া হয়েছে।মনোয়ারার গর্ভে ৩ জন এবং মৌসুমীর গর্ভে ১ জন সন্তান রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, মিজানুর রহমান গাজীপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের গাড়ীর চালক হিসেবে চাকুরীরা সুবাধে কয়েকটি পরিবহন, ৪টি মাইক্রো, ঢাকায় ফ্লাট, সাতক্ষীরা সদরে জমি ও শ্যামনগরে জমি ক্রয় সহ বিল্ডিং করেছেন। নামে বেনামে কয়েক কোটি টাকা ব্যাংক ও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে রাখার অভিযোগ উঠেছে। যথাযথ তদন্ত করলে তার অবৈধ সম্পদের পাহাড় খুঁজে বের করা সম্ভব হবে। তার বিরুদ্ধে ১২টির বেশি মামলা ও অভিযোগ রয়েছে। গাজীপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আরেফিন বাদল জানান, মিজানুর রহমানের গ্রেফতারের বিষয়ে অফিসিয়ালি ভাবে তিনি জানতে পারেন নি। শ্যামনগর থানা অফিসার ইনচার্জ মোল্লা হুমায়ূন কবির জানান, মিজানুর রহমান কে গ্রেফতার করে সোনাডাঙ্গা পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়েছে। মিজানুর রহমান জানান, তিনি প্রতারনার স্বীকার হয়েছেন। এ ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
Leave a Reply