সংবাদ শিরোনামঃ
 আটুলিয়া ইউনিয়নে ১৫ টি হতদরিদ্র পরিবারের মধ্যে ৩,০০০ লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন পানির ট্যাংকি বিতরণ  কালিগঞ্জের বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন বিএনপি”র অফিস উদ্বোধন রমজাননগরে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও জলবায়ু ন্যায্যতা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে সিসিডিবির জলবায়ু সহনশীল জনগোষ্ঠী তৈরির লক্ষ্যে এনজিও গনমাধ্যমকর্মী ও ইউ পি সদস্যদের সাথে মতবিনিময় সভা ভূমিদস্যুদের হাত থেকে ভূমিহীনদের জায়গায় ফেরত ও মিথ্যা মামলা থেকে রেহায় পেতে মানববন্ধন  শ্রীমঙ্গলে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জমি দখল স্কুল পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীদের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সচেতনতামূলক ভিডিও প্রদর্শনী কালিগঞ্জের ভাড়াশিমলায় জামায়াতে ইসলামির কর্মী শিক্ষা শিবির অনুষ্ঠিত হয়েছে  কালিগঞ্জের কৃতি সন্তান ড. রেজাউল করিম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভিসি শ্যামনগরে সরকারি খাল থেকে অবৈধ পাটা অপসারণ ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
ঘুষ-দুর্নীতির শীর্ষে শ্যামনগর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার সজল

ঘুষ-দুর্নীতির শীর্ষে শ্যামনগর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার সজল

শ‍্যামনগর প্রতিনিধিঃ

শ্যামনগর উপজেলা ভূমি অফিস কে ঘুষ-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ সার্ভেয়ার সজল হোসাইন।নাক ডুবিয়ে কাড়িকাড়ি টাকা খাচ্ছেন তিনি। কতিপয় দালালদের সমন্বয়ে গড়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র।

সার্ভেয়ার সজল এসি ল্যান্ড অফিসে যোগদানের পর থেকেই জনসাধারণের কাছ থেকে জমির নামজারি ও জমাভাগ বাবদ লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। ঊর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষের নজরদারির অভাবে সার্ভেয়ার সজল চক্রটি এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, শ্যামনগর উপজেলা ভূমি অফিসের অধীন তহশিল অফিস ১১ টি । অফিসগুলো হল নকিপুর পৌর ভূমি অফিস, ঈশ্বরীপুর ভূমি অফিস, মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিস, আটুলিয়া ভূমি অফিস, পদ্মপুকুর ভূমি অফিস, কৈখালী রমজাননগর ভূমি অফিস, ভুরুলিয়া, নুরনগর, বুড়িগোয়ালিনী ও গাবুরা ইউনিয়ন ভূমি অফিস।

এসব তহশিল অফিসগুলো থেকে এসিল্যান্ড অফিসে শত শত খারিজের প্রস্তাব পাঠানো হয়। এর মধ্যে মাসে প্রায় এক হাজার নথি অনুমোদন হয়।

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দোহাই দিয়ে, অনুমোদনপ্রাপ্ত নথিগুলো থেকে সার্ভেয়ার সজল বিভিন্ন হারে ঘুষ আদায় করেন।

সেবাপ্রার্থী অনলাইনে খারিজের আবেদন করার পর এসিল্যান্ড অফিস থেকে প্রতিবেদনের জন্য সংশ্লিষ্ট তহশিল অফিসে পাঠানো হয়। সেখানে আবেদনে উল্লেখিত মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়ে আবেদনকারীকে কাগজপত্র নিয়ে যেতে বলা হয়। আবেদনকারী ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বা উপ-সহকারী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করলে তারা অফিসের কর্মচারী বা উমেদার নামধারী দালাল দেখিয়ে কথা বলতে বলেন।অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের মৃত অনন্ত কুমার মন্ডলের পুত্র রজনীকান্ত মন্ডল। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, শ্যামনগর উপজেলাধীন জেএল নং- ৯৪, চন্ডিপুর মৌজায় এসএ খতিয়ান নং-২৫২, দাগ নং-২৪৫, ২৪৬, ডিপি-১৬ নং খতিয়ানে হাল-৪৪৩ দাগে ৫৩ শতক সম্পত্তি আমার পিতা জীবিত থাকতে প্রকৃত জমির মালিকের নিকট হতে রেজিষ্ট্রি কোবলমুলে প্রাপ্ত হয়। তারা ৪ ভাই ওয়ারেশ সূত্রে প্রাপ্ত হয়ে সরকারি রাজস্ব করাদি পরিশোধ করে চাষাবাদের মাধ্যমে শান্তিপূর্নভাবে ভোগ দখল করে আসছিল। প্রতিপক্ষ একই গ্রামের মৃত কেনারাম মন্ডলের পুত্র শিবপদ মন্ডল অন্যায়ভাবে জবরদখলের চেষ্টা চালায়।

এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত সাতক্ষীরা বরাবর ১৪৫ ধারা মোতাবেক ১১৭৯/২৩ নং পিটিশন মামলা রুজু হয়। বিজ্ঞ আদালত শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে শ্যামনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কে ঘটনা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। সহকারি কমিশনার (ভূমি) সার্ভেয়ার মো. স্বজল হোসাইনকে দায়িত্ব দেন। সজল হোসাইন প্রতিপক্ষের নিকট থেকে মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণ করে একতরফা প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। যা প্রতিপক্ষের সাজানো। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শ্যামনগর প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলন করে।

শ্যামনগর পৌরসভার নকিপুর গ্রামের মেহেদী হাসান জানান, সার্ভেয়ার সজলের আচরণ সম্পর্কে শ্যামনগরের অধিকাংশ মানুষ অবহিত।এসি ল্যান্ড অফিসে কাজ নিয়ে আসা প্রতিটি মানুষকে সে প্রতিনিয়ত হয়রানি করে, এটা নতুন কিছু নয়। তিনি জানান, আমার একটা নামজারিতে ওই ভদ্রলোক ২০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। ওনার ভাষ্যমতে মুহুরি সিন্ডিকেটের বাইরে, আবেদনকারি কেউই ওনার রুমে যেতে পারবে না, কারণ মুহুরিগনদের কাছ থেকে টাকা নিতে সুবিধা হয়। ওনার মতো ওই অফিসে আর কারও আচরণ এতো খারাপ নয়। অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যাবর্তন ট্রাইবুনাল ও অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যাবর্তন আপীল ট্রাইবুনাল থেকে ডিক্রি প্রাপ্ত আমার নিজের মামার নামীয় একটা সম্পত্তির নামজারি করতে গিয়ে কোন এক শুভলগ্নে, পরিচয় ঘটেছিল ভদ্রলোকের সাথে।

বিজ্ঞ আদালতের ডিক্রিপ্রাপ্ত এ সম্পত্তির নামজারি করতে গিয়ে সার্ভেয়ার সজল হয়রানি করতে থাকে দিনের পর দিন, তার টেবিলে রীতিমত ২০ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়াতে হয়েছিল কেসটি। উনি ব্যাতিত ওই অফিসের অন্যান্য স্টাফরা অনেক আন্তরিক। তারা কাউকে অযথা হয়রানি করে না।

স্বেচ্ছাসেবক জান্নাতুল নাঈম জানান,
আমাদের একটি দোকান অনুমোদন করতে যেয়ে মোটা অংকের ঘুস নিয়েছে সার্ভেয়ার সজল ।
কালিগঞ্জ মহিলা কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আব্দুল আজিজের স্ত্রী জেবুন্নেসা বলেন, ভূমি অফিসের একটা কাজে আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে প্রতিপক্ষের কাছে অনেক টাকা খেয়েছে। আমার এক দেবর গিয়েছিল কাজের জন্য তার কাছে ২০ হাজার টাকা চেয়েছে।

শ্যামনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রনি জানান, সার্ভেয়ার সজল অভদ্র,এবং খুব বাজে একটা মানুষ,
টাকা ছাড়া কোন কাজই করে না।

মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মাজেদ মোড়ল জানান,

লোকটা একটা বদমায়েশ। অফিসে আমার সাথে একদিন খারাপ ব্যবহার করেছে। ওর ব‍্যবহার অত‍্যান্ত বাজে।

ঈশ্বরীপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট শোকর আলী জানান, আমরা তাকে এখনো শ্যামনগরে দেখছি , এটা আমাদের ব্যর্থতা।

সার্ভেয়ার সজল হোসাইন এর কাছে এ বিষয়ে বারবার জানতে চাইলেও তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।

শ্যামনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল রিফাত জানান, যদি তার বিরুদ্ধে কোন লিখিত অভিযোগ আসে তাহলে তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখবেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগীতায়- সুন্দরবন আইটি লিমিটেড