উপকূলীয় অঞ্চল (শ্যামনগর)প্রতিনিধিঃ
দেশে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েও খুব বেশি সুফল মিলছে না; বরং অবৈধ ইটভাটার সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করলেও সবগুলো আবার এক এক করে চালু হয়ে গেয়েছে।
দেশে চালু অনেকের পরিবেশ ছাড়পত্র নেই, চলছে ইটভাটা আইন অমান্য করে।
গত সপ্তাহে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রণালযই পাঠানো প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত চার বছরে প্রায় ১ হাজার ৫০০ অবৈধ ইটভাটা বেড়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ হাজার অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করলেও সেগুলোর ৭৫ শতাংশই আবার চালু হয়ে গেছে।
অবশ্য বেসরকারি পর্যবেক্ষণ বলছে, দেশের বেশির ভাগ ইটভাটা নিয়মবহির্ভূতভাবে চলছে। এসব ইটভাটার কারণে ঘটছে বায়ুদূষণ।
দেশে মোট ইটভাটা চালু আছে ৭,০৮৬টি। এর মধ্যে কোনো পরিবেশ ছাড়পত্র নেই ৪,৫০৫ ইটভাটার।
ইটভাটাগুলোর জন্য বছরে মাটি লাগে
১৩ কোটি মেট্রিক টন। মোট ইট উৎপাদিত হয় ৩ কোটি ৫০ লাখ।
নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৩-এ বলা হয়েছে, বসতি এলাকা, পাহাড়, বন ও জলাভূমির এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ইটভাটা করা যাবে না। কৃষিজমিতেও ইটভাটা অবৈধ। অথচ দেশের প্রায় শতভাগ ইটভাটা এই আইন মানছে না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাবে, দেশে মোট ৭ হাজার ৮৬টা ইটভাটা চালু আছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৫০৫ ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র নেই।
এসব ইটভাটায় বছরে প্রায় ৩’ কোটি ৫০ লাখ ইট তৈরি হচ্ছে। এসব ইটভাটার বছরে ১৩ কোটি মেট্রিক টন মাটি লাগে। মূলত কৃষিজমির ওপরের উর্বর অংশ কেটে ইটভাটার কাজে লাগাচ্ছে।
পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ইটভাটা শুধু উর্বর মাটি ধ্বংস করছে না। বায়ু, মাটি ও প্রকৃতির স্থায়ী ক্ষতি করছে। স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও প্রভাবশালীদের ছত্র ছায়ায় এসব ইটভাটা চলছে বলে জানান স্স্থাথানীয়রা।
প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে যেসব রোগী আসছে, তার বেশির ভাগ শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বৃদ্ধ ও শিশুর সংখ্যা বেশি। ধুলাবালুর কারণে এমন রোগীর সংখ্যা বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।
বেশ কিছু ইটভাটা নিয়ম না মেনেই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় গড়ে উঠেছে। যেগুলোর পাশেই রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আবাসিক স্থাপনা।
জেলা জুড়ে এমন বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আবাসিক এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ইটভাটা। যদিও স্কুল-কলেজের এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ভাটা তৈরির নিয়ম নেই। তবুও সরকারি নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করে দেদারচ্ছে গড়ে উঠেছে এসব অবৈধ ইটভাটা।
শ্যামনগর সোনার মোড় এলাকার বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক তিনি বলেন, ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় গাছের পাতা মরে যায়, ফসলি জমির ক্ষতি হয়। একসময় এই এলাকায় অনেক ধান চাষ হতো, এখন দূষণের কারণে চাষাবাদ কমে গেছে।
গ্রামিন রাস্তা নষ্ট করছে ইটভাটার মাটি ও ইট বহনকারী ডাম্পার গাড়ি অভিযোগ স্থানীয়দের।
Leave a Reply