সাতক্ষীরার শ্যামনগরে প্রতিপক্ষের প্রায় ৭০ বছরের ভোগদখলীয় জমি আব্দুল ওদুদ গাজী নামের এক আ’লীগ নেতা জবর দখলের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিজের সম্পত্তিতে বোরো চাষের সুযোগে প্রয়াত অধ্যাপক নজরুল ইসলামের মালিকানাধীন ঐ জমি ওদুদ ও তার ভাইয়েরা দখলের ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ। এর আগে উক্ত জমির ধান লুট, পরিবারের নারী সদস্যদের ব্যবহার করে রাস্তার মধ্যে প্রতিপক্ষকে লাঞ্চিতের পাশাপাশি হয়রানীমুলক মামলায় জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে ঐ আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে। মুল মালিকের মৃত্যু ও ওয়ারেশদের এলাকায় অনুপস্থিতিরি সুযোগে স্থানীয়ভাবে দৌর্দন্ড প্রভাবশালী ওদুদ অর্ধ্ব কোটি টাকা মুল্যের ভবানীপুর মৌজার ঐ সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে তৎপর হয় বলে অভিযোগ।
আব্দুল ওদুদ উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের মৃত মোবারক গাজীর ছেলে ও নুরনগর ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি। এলাকার চিহ্নিত মামলাবাঁজ আবুল কাশেমের সাথে যোগসাযশে তিনি প্রয়াত নজরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হয়রানী করছেন বলেও অভিযোগ। এসব ঘটনায় প্রতিকারের দাবিতে বিজ্ঞ আদালতসহ থানা পুলিশের দারস্থ হয়েও ওদুদের রোশানল থেকে রক্ষা পাচ্ছে না ভুক্তোভোগী পরিবারটি। যদিও পুলিশের দাবি আইনের মধ্যে থেকে হয়রানীর শিকার পরিবারকে সর্বোত সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
প্রয়াত নজরুল ইসলামের ছেলে গোলাম আযম বলেন, ১৯৫৫ সালে তার পিতা ওমর সরদার ও বৈদ্যনাথ সিংয়ের নিকট থেকে ভবানীপুর মৌজার ৯৯ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। পরবর্তী এসএ ও বিএস রেকর্ডের মালিকানাসুত্রে তারা দীর্ঘদিন উক্ত জমি ভোগদখল ছিলেন। তবে ২০১৭ সালে পিতার মৃত্যুর পর আবুল কাশেমের প্ররোচনায় ২০১৮ সালে আব্দুল ওদুদ সাতক্ষীরা ল্যান্ড সার্ভে আদালতে জমির মালিকানা দাবি করে মামলা করেন।
গোলাম আজম অভিযোগ করেন মামলা দায়েরের পর থেকে ওদুদ প্রতিবছর আমন মৌসুমে জমি দখলের চেষ্টা করছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওদুদের লোকজন ধান লুটের চেষ্টা করলে মামলা দায়েরের পর শ্যামনগর থানার পুলিশ আব্দুল কাদের তুহিন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে। তবে অতি সম্প্রতি তুহিন ও ওদুদের চেলে সফিকুল আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় ফিরে আবারও বেপরোয়া আচারণ করছে। একপর্যায়ে গত ২৯ জানুয়ারী তারা পরিবারের নারী সদস্যসহ ২০/২২ জনকে নিয়ে উক্ত জমিতে চাষের চেষ্টা করে। পরবর্তীতে শ্যামনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছালে দখলবাঁজরা সেখান থেকে চলে যায়।
গোলাম আযম আরও বলেন ওদুদ ল্যান্ডে সার্ভে ট্রাইবুনালে মামলা দায়েরের পর তারা মহামান্য হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছেন। উচ্চ আদালত উক্ত জমিতে স্থিতিবস্থা বজায়ের নির্দেশনা দিলেও আ’লীগ নেতা ওদুদ সেসবে তোয়াাক্কা করছে না। বরং মহামান্য আদারতের নির্দেশনাকে ‘কলার পাতা’ উল্লেখ করে আরও বেশী বেশী মামলায় জড়ানোর পাশাপাশি ঐ এলাকায় গেলে মারধরের হুমকি দিচ্ছে।
এসব বিষয়ে আব্দুল ওদুদ বলেন, হাইকোর্ট নিষেধ না করায় তিনি জমিতে যাচ্ছেন। আদালতের রায় প্রকাশ হলে তিনি জমির দখল ছেড়ে দেবেন।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভুক্তোভোগী পরিবারকে বিজ্ঞ আদালতের দারস্থ হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ধান লুটের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। নুতন করে জমি দখলের অভিযোগ পেয়ে সাধারন ডায়েরী গ্রহনপুর্বক ঘটনাস্থলে পুলিশ প্রেরণ করা হয়েছে।
Leave a Reply