কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি
খুলরার কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়ন ৬নং কয়রা গ্রামের শাকবাড়িয়া নদীর বেড়ীবাঁধ সংস্কারে ভেকু (এক্সকাভেটর)মেশিন ব্যবহার করে চর বনায়নের গাছ উপড়ে ফেলার প্রতিবাদে সোমবার সকালে মানববন্ধন করে। দুই শতাধিক নারী-পুরুষের প্রতিবাদের মুখে নদীর চরের গাছ উপড়ে ফেলা ও ঢালের মাটি কাটার কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন।
এলাকাবাসীর দাবি, বেড়ীবাঁধ মেরামতের নামে বাঁধ রক্ষাকারী চরের গাছ এবং এক্সকাভেটর দিয়ে ঢালের মাটি কেটে বেড়ীবাঁধ মেরামত করা হলে পুনরায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে বাঁধটি।বছর না যেতে বাঁধটি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই ভেকু মেশিন বাদ দিয়ে লেবারের মাধ্যমে ঝুড়ি কোদাল দিয়ে মাটি কেটে বেড়ীবাঁধ সংস্কারের কাজ করতে হবে।
উপস্থিত এলাকাবাসী জানায়, ৬নং কয়রা গ্রামের শাকবাড়িয়া নদীর তীরে ১ কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড টেন্ডার ছাড়াই সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির মাধ্যমে বিল্পব এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়। কাজটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে ৬নং কয়রা এলাকার ইউপি সদস্য হরেন্দ্র নাথ সরকার তদারকির দায়িত্ব নিয়েছেন।
তিনি দায়িত্ব নিয়ে ভেকু মেশিন দিয়ে চরবনায়নের গাছ উপড়ে মাটি কেটে বেড়ীবাঁধ সংস্কার কাজ শুরু করলে এলাকার সাধারন মানুষ প্রতিবাদ করে। তাতে কর্ণপাত না করালে সোমবার সকালে দুই শতাধিক এলাকার মানুষ একত্রিত হয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
৬নং কয়রা গ্রামের জয়ন্তী রানী মন্ডল বলেন, বেড়ীবাঁধ সংস্কার করা হোক সেটি আমরাও চাই। তবে নদীর চরের গাছ কেটে ও ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে নয়। কারণ নদীর চরের গাছ কাটলে দ্রুতই নদী- ভাঙ্গনের কবলে পড়বে। তাই আমরা চাই লেবার দিয়ে ঝুড়ি-কোদালের মাধ্যমে বেড়ীবাঁধ সংস্কার করা হোক।
একই আয়ুব আলী মোল্যা বলেন , বেড়ীবাঁধ মেরামতের কাজে বড় ভেকু মেশিন ব্যবহার করে চরের গাছ উপড়ে বাঁধের নিকটে ঢালের মাটি কেটে গর্ত তৈরী করা হচ্ছিল। আমরা এলাকাবাসী সম্মিলিত ভাবে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। এভাবে কাজ চালালে নদীর পানির তুফানে রাস্তা ভেংগে উপকারের চেয়ে ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা বেশি।
স্থানীয় বাসিন্দা তুষার রায় বলেন, বাঁধ রক্ষাকারী চরের গাছ না কেটে রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়ে আমরা এলাকাবাসী গণ স্বাক্ষরিত একটি লিখিত আবেদন কয়রা উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা, কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে প্রেরণ করেছি।
ইউপি সদস্য হরেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবির মুখে আপাতত কাজ বন্ধ আছে। কাজটি মুলত কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার সরদারের। আমি তার অনুরোধে কাজটি দেখাশোনা করতাম।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বিভাগ-২) নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহনেওয়াজ তালুকদার বলেন,বাঁধ মেরামতের জন্য নদীর চরের গাছ কাটার সংবাদ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মমিনুর রহমান বলেন,চর বনায়নের গাছ উজাড় করে বাঁধ সংস্কারের সুযোগ নেই।গাছ কেটে থাকলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply