কেরানীগঞ্জ(ঢাকা) প্রতিনিধি :ঢাকার কেরানীগঞ্জে অজ্ঞান পার্টির ১৫ সদস্য আটক ৩ টি ক্লুলেস হত্যা মামলা সহ ৪টি মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন,২০২২ সালের ২৮ অক্টোবর তারিখ সন্ধ্যা বেলায় সংঘবদ্ধ অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা বয়স্ক অটোচালক খোরশেদ আলম (৫৭)-কে সিরাজদীখানের নিমতলি থেকে শ্রীনগর যাবে বলে ভাড়া করে। তাকে শ্রীনগর পেট্রোল পাম্পে নিয়ে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা কৌশলে অটোচালক খোরশেদকে চেতনানাশক ঔষধ মিশিয়ে শরবত খাইয়ে দেয়। কিছুক্ষনের মধ্যে অটোচালক খোরশেদ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা তাকে শ্রীনগর থেকে নিয়ে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ের টোলপ্লাজা সংলগ্ন রাস্তার পার্শ্বে ফেলে দেয়। তারা খোরশেদের অটো নিয়ে পালিয়ে যায়। দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা পুলিশ তাৎক্ষনিকভাবে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল হতে খোরশেদকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। অটোরিকশা চালক খোরশেদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি অটো ছিনতাইসহ হত্যা মামলা রুজু হয়। এভাবে একাধিক ঘটনা হয় কেরানীগঞ্জে।
এসব ঘটনার পর থেকে পুলিশ এই অপরাধ চক্রের সদস্যদের ধরার জন্য বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। অজ্ঞান পার্টির এধরনের ঘটনার প্রেক্ষিতে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার জনাব আসাদুজ্জামান পিপিএম (বার) দ্রুত সংঘবদ্ধ এ অজ্ঞান পার্টিকে ধরার জন্য বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম এন্ড অপস এর সার্বিক আমিনুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কেরাণীগঞ্জ সার্কেল শাহাবুদ্দীন কবিরের নেতৃত্বে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার একটি চৌকস তদন্ত টিম সংঘবদ্ধ হয়ে অজ্ঞান পার্টিকে ধরার জন্য ব্যাপক কার্যক্রম শুরু করে। তদন্ত টিম প্রতিটি ঘটনার প্রকৃতি ও যোগসূত্র বিচার বিশ্লেষন করে তথ্য সংগ্রহ করে। ঘটনাস্থলের সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করে। তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের সনাক্ত পূর্বক তাদের অবস্থান নির্নয় করে।
দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা অফিসার্স ইনচার্জ মোহাম্মদ শাহ্জামানের নেতৃত্বে একটি চৌকস আভিযানিক দল কেরাণীগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এবং ডিএমপির বিভিন্ন এলাকা হতে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে মামলার ঘটনার সরাসরি জড়িত সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা অজ্ঞান পার্টির ১৫ জনকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন , ১। বাদশা (৩৫), ২। ওলি (৩৪), ৩। সুলতান (৫৮), ৪। সুমন কারাল (২৭), ৫। বিরিয়ানি সুমন (৩৫), ৬। শাহিন (২৮), ৭। আলামিন ওরফে অনিক (২৮), ৮। জামাল (৩০), ৯। মনির (২৭), ১০। আশরাফ (৪২), ১১। গ্যারেজ বাদশা ( ২৮), ১২। জুয়েল (৩৯),১৩। বাচ্চু (৫৫), ১৪। রাজু (৪১), ১৫। সাইদুর (৩৮)। এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে পুলিশ সুপার জানান।
Leave a Reply