
বুড়িগোয়ালিনী (শ্যামনগর) প্রতিনিধিঃ
হরিণ শিকার মতো অপরাধ দমনে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের পক্ষ থেকে অভিনব একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে করে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন, সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও নিরাপত্তা জোরদার করার ক্ষেত্রে নতুন আশার আলো দেখছেন পরিবেশবিদ ও স্থানীয়রা।
বন বিভাগ সুত্রে যানা গেছে সুন্দরবনে হরিণ শিকার নিয়ন্ত্রণে পশ্চিম বন বিভাগে হরিণ ধরার জালের ফাঁদ উদ্ধারে অভিনব ঘোষনা দিয়েছে।কেউ সুন্দরবন থেকে নাইলনের জালের ফাঁদ,ও হরিণ ধরার ফাঁদ উদ্ধার করে জমা দিলে প্রতি কেজি ফাঁদের বিনিময়ে জমাদানকারী ব্যক্তিকে সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় ১হাজার টাকা পুরষ্কার হিসেবে পুরস্কৃত করা হবে।
তবে ২০২০ বিধিমালায় বন বিভাগ অপরাধ উদঘটনে তথ্য প্রদানকারী ব্যক্তকে পুরষ্কারের ঘোষনা করে সেখানে বাঘ হত্যার সাথে জড়িত ব্যক্তি তথ্যদাতার প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বনের ভেতরে ধরা পড়লে ৫০ হাজার টাকা ও বনাঞ্চলের বাহিরে ধরা পড়লে ২৫ হজার টাকা,হরিণ শিকারী বনাঞ্চলের ভেতরে ২০ হাজার ও বনাঞ্চলের বাহিরে ১০ হাজার,কচ্ছপ,সাপ, বনাঞ্চলের ভেতরে ১৫ হাজার, বাহিরে ১০ হাজার টাকা পুরষ্কার পাবে।
সুন্দরবন সংলগ্ন স্থানীয় সুধিজনরা বলেন, এক শ্রেনীর অসাধু হরিণ শিকার চক্র হরিণ ধরার ফাঁদ পেতে সুন্দরবনে নির্বিকারে হরিণ শিকার করছে। তবে হরিণ শিকার বন্ধ না হলে প্রকৃতির উপর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।
বন্যপ্রাণী পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সুন্দরবনে হরিণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সুন্দরবনের মতো সংরক্ষিত বনাঅঞ্চলের হরিণ শিকার করা সেখানকার জীববৈচিত্র্যের জন্য বড় ক্ষতি এমনটা ধারনা করছেন বন বিভাগ।
বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন,সাম্প্রতিক সময়ে অসাধু চক্রটি সুন্দরবনে হরিণ শিকার করে যাচ্ছে এমন খবরে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ, খুলনা নির্দেশ ক্রমে এবং রেঞ্জ কর্মকর্তা,সাতক্ষীরার নেতৃত্বে ফাঁদ উদ্ধারের অভিযান চলছে এবং সুন্দরবন সংলগ্ন যে সব স্থানে হরিণ শিকারের প্রবণতা বেশি সেসব স্থান চিহ্নিত করে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সুন্দরবনে অপরাধ দমনে ভবিষ্যতেও এধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এছাড়াও বন ও পরিবেশ সুরক্ষায় নিয়মিত গণসচেতনতা মূলক ক্যাম্পেইন চালানো হচ্ছে।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মশিউর রহমান বলেন, সুন্দরবনে হরিণ শিকার ও বিষ দিয়ে মাছ ধরার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আমরা অনেক গুলো উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। তার মধ্যে একটি হলো তথ্য দাতাকে উৎসাহিত করার জন্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় পুরস্কার প্রদান। তিনি আরও বলেন, জেলে,বাওয়ালী,মৌয়াল,বনে ফাঁদ দেখলে সবাইকে ফাঁদ উদ্ধার করে জমা দেওয়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় প্রতি কেজি ফাঁদ জমা দিলে ১হাজার টাকা করে পুরষ্কার হিসেবে দেওয়া হবে।
তবে কেউ বনে ফাঁদ দেখলে সংশ্লিষ্ট বন কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে ফাঁদ উদ্ধার করতে হবে বলে যানান এ কর্মকর্তা।
Leave a Reply