শ্যামনগর প্রতিনিধিঃ
সুন্দরবনের পশ্চিম পাশে জলবায়ু দুর্গত একটি ইউনিয়ন ঈশ্বরীপুর ।১০ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ধুমঘাট (তেরকাটির চক) গ্রামে স্থানীয় জাতের ফসলের বীজ সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে স্থানীয় বীজের একটি মেলা অনুষ্টিত হয় ।
১৬কর্মের দিন বিশ্বব্যাপী এর উপর কৃষিবিদ্যা-২০২৪
উপলক্ষ্যে পেষ্টিসাইড একশন নেটওর্য়াক এশিয়া প্যাসিফিক (প্যানাপ),ধুমঘাট শাপলা নারী উন্নয়ন সংগঠন, স্বপ্নচুড়া যুব সংগঠন, সবুজ সংহতি, শ্যামনগর উপজেলা যুব সমন্বয় কমিটি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক”র আয়োজনে এই অনষ্ঠানে কুষক, জেলে, নারী পুরুষ, যুব, সাংবাদিক, স্থানীয় জনগোষ্টি ও স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।
স্থানীয় জাতের ফসলের বীজ সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বীজমেলায় ধুমঘাট গ্রামের ৩টি চকের ১৪ জন কৃষানী প্রায় ৮১ ধরনের ও স্থানীয় বীজ প্রদর্শন করেন (লালশাক, পালনশাক,টকপালন,টমেটো,বেগুন,ঝাল,মুলা,উচ্ছে,কুশি,লাউ,বরবটি,মিষ্টিকুমড়া,পটল, ঝিঙে, সিম, বরবটি, তরুল, ভুট্টা, চৈতিমুগ, কলুইডাল, ওল, কচুরমুখি, আদা,হলুদ,পেপে,পুইশাক, ডাটাশাক, ধনে,বাতোশাক, চন্দনবাতো,শ্বেতবাতো, চুবড়িআলু, বড়আলু, শসা,ঢেড়স, চালকুমড়া, জালিকুমড়া, সরিষা, পাটসহ অন্যান্য বীজ)। কৃষানীদের প্রদর্শিত বীজের সংখ্যা,মান ও বীজ উপস্থাপনের উপর ভিত্তি করে কৃষানীদের পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।মেলায় প্রবীণ কৃষানীরা নতুন প্রজন্মের কাছে বীজ বিনিময় করেন।
স্থানীয় জাতের ফসলের বীজ সংরক্ষণে সচেতনতা তৈরীতে মুল আলোচনা করেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রামকৃষ্ণ জোয়ারদার ও কৃষানী অল্পনা রানী মিস্ত্রি।
মেলায় বক্তব্য রাখেন সাবেক ইউপি সদস্য মিতা রানী মন্ডল কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা শিখন কেন্দ্রের গোবিন্দ মন্ডল, স্বপ্নচুড়া যুব সংগঠনের প্রদীপ সরদার,কৃষানী হাসিনা বেগম প্রমুখ।
অনুষ্টানে উপস্থিত বক্তারা বলেন, নারীর হাত ধরেই কৃষির সুচনা।নারীই কৃষির ধারক। গ্রামীণ নারীরা নানা ধরনের ফসলের বীজ সংরক্ষণের মাধ্যমে প্রাচীন সেই প্রথা এখনো টিকিয়ে রেখেছেন। কৃষক ফসল উৎপাদন করবে এবং বীজ সংরক্ষণ করবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু বর্তমান সময়ে আমাদের কৃষকরা বাজার নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এখান থেকে আমাদের বের হতে হবে। ভালো বীজ ও ভালো জাত সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। মানসম্মত বীজই আমাদের সম্পদ। বীজ যদি সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করা যায় তাহলে ভালো ফলন পাওযা যায়। তাই বীজ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ। বাজার নির্ভরশীলতা কমানোর জন্য আমাদের স্থানীয় প্রজাতির বীজ সংরক্ষণ করতে হবে। স্থানীয় জাতের বীজ থেকে হওয়া গাছে পোকার আক্রমণ কম হয় ফলে তেমন সার ও কীটনাশক দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।
বীজ সংরক্ষণ করতে না পারলে আমাদের সবার জন্য ক্ষতি হবে। স্থানীয় জাতের ফসলের বীজ রক্ষার জন্য সকলের ঐক্যবদ্ধ এবং উদ্যোগী হতে হবে। বীজমেলা শেষে নিরাপদ খাদ্যের দাবীতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি অনুষ্টিত হয়।
সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বারসিকের প্রোগ্রাম অফিসার বাবলু জোয়ারদার।
Leave a Reply