সাগর তালুকদার রনি,বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জে বলসুন্দরী ‘কুল’ চাষে সাড়া ফেলেছেন আবু বকর (৫১)।
শখের বসে করা ফুল বাগানের অনুপ্রেরণা যে তাকে একজন দক্ষ ও সফল চাষী করে তুলবে তা আবু বকর নিজেও কল্পনা করেনি।
বিদেশে চাকুরীতে না গিয়েও দেশের মাটিতে এখন সোনার ফসল ফলিয়ে বছরে উপার্জন করছেন লাখ লাখ টাকা।
রোববার(২৮ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার দৈবজ্ঞহাটী ইউনিয়নের আলতী বুরুজবাড়িয়া গ্রামের মৃত. মোশারফ শেখের ছেলে মো. আবু বকর শেখ ৬৬শতক জমিতে অস্টেলিয়ান প্রজাতের ১৫০ টি বলসুন্দী কুল ফলে চাষ করে এখন গোটা দক্ষিণাঞ্চলে সাড়া জাগিয়েছে। তিনি মোট ৮ একর জমি ( ৩ একর জমি নিজের এবং বাকি ৫ একর জমি লিজ) নিয়ে গড়ে তুলেছে এ নার্সারি। তার এ নার্সারীতে রয়েছে এখন কোটি টাকার বিনিয়োগ।
তার বাগানের প্রতিটি কুল গাছ থেকে এক মন করে কুল বরই ফল তুলছেন তিনি। ২ মাস বয়স থেকে ৫ মাসের মধ্যে ফলন আসে। ৩ মাস থাকে এ কুল উৎপাদন। এ বারে তিনি ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার কুল বরই বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন। অনলাইনের মাধ্যমে ক্রেতারা চাহিদা অনুযায়ী ৮০ টাকা কেজি দরে কুল বরই কিনে নিচ্ছেন। পাশাপাশি এ প্রজাতের কলম বিক্রি হচ্ছে।
ইতোমধ্যে এ উপজেলার বাহিরে পিরোজপুর, বরিশাল জেলার বিভিন্ন উপজেলায় চাষীরা কলম কিনে নিয়েছেন তার বাগান থেকে। বাগানটি পরিচর্যার জন্য প্রতিনিয়ত ৭শ’ টাকা মজুরিতে ৮ জন শ্রমিক কাজ করছে।
এছাড়াও এ বাগানে অন্য প্রজাতের বাউকুল, কাশমেরী কুল চাষেও সফল হয়েছেন তিনি। চাষি আবু বকরের নেশা-পেশা শুধু বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশী ফুল ও ফলের বাগান করা। লিচু, আম, পেয়ারা বিভিন্ন প্রজাতের বরই বাগানসহ ১১টি ফুল ও ফলের বাগান রয়েছে তার।
প্রতিনিয়ত ছুটে আসছে বাগান দেখতে বিভিন্ন জেলার চাষিরা। কিনে নিচ্ছে তারা বলসুন্দরী কলম চারা। বাম্পার ফলন পেয়ে এ চাষে উৎসাহিত হচ্ছে অন্যচাষীরাও।
চাষী আবু বকর শেখ জানান , ৯ বছর বয়সে বাবা মারা যায় । ছোট বেলা থেকে ফুল চাষে অনেক শখ ছিল, শখের বসে ফুলের বাগান করি।১৪ বছর বয়সে আমি এ ব্যবসায় পুরোপুরি জড়িয়ে পরি। শখের বসে করা ফুল বাগানের অনুপ্রেরণা আমাকে একজন দক্ষ ও সফল চাষী করে তুলবে তা আমি নিজেও কল্পনা করেনি।
পরিবারে বৃদ্ধ মাতা, স্ত্রী, ২ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে তার।
বর্তমানে তিনি এ বলসুন্দরী কুলের চাষ করে একজন সফল চাষী হিসেবে যুব সমাজকে এ নার্সারী চাষে এগিয়ে আশার আহবান জানান।
তবে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে তিনি কখনো কোনো সহায়তা পান নি বলে জানান।
এ বিষয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী জানান,নার্চারিতে সরকারি ভাবে সহায়তার বরাদ্দ না থাকায় তাকে কোন সহযোগিতা করতে পারছি না।তবে আমরা কয়েকবার তার নার্চারি পরিদর্শন করেছি।
সম্পাদকঃ এম এ হালিম, মোবাইল: ০১৯১১-৪৫১৬৯৭,০১৭৮১১৫৮৯২৯ , Email- halim.nildumur@gmail.com.