ডুমুরিয়া প্রতিনিধি :খুলনায় পারিবারিক বিরোধের জেরে এক মা তার দুই শিশু সন্তান মেয়ে ফাতেমা (৬) ও ছেলে ওমর (৭ মাস) বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার পর মা নিজেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ডুমুরিয়া গুটুদিয়া ইউনিয়নের কোমলপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান সরদারের স্ত্রী ডলি বেগম (৩৮)। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে কোমলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানায়, ডলি বেগমের স্বামী আব্দুল মান্নান সরদার লেকসাস গাইড বইয়ের একজন মার্কেটিং অফিসার। প্রতিদিন সকালে তিনি বাড়ি থেকে কর্মস্থল খুলনার উদ্দেশে বেরিয়ে যান। তবে আজ শনিবার ছুটি থাকার কারণে কাজের চাপ কম থাকায় তিনি উপজেলা সদর ডুমুরিয়া বাজারের উদ্দেশ্যে বের হন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি বাড়িতে এসে ঘরের দরজা বন্ধ দেখতে পান। এ সময় তিনি তার মা ও স্ত্রী-সন্তানদের ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে পাশে চাচাতো ভাইয়ের বাড়িতে যান। সেখানে তার স্ত্রী ও সন্তানদের না পেয়ে মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। পরে হাসুয়া দিয়ে দরজার খিল খুলে স্ত্রী ডলি বেগমকে গলায় রশি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় এবং তার শিশু সন্তান ফাতেমা ও ওমরের লাশ ঘরে পড়ে থাকতে দেখেন। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে এ ঘটনা জানতে পারেন।
এলাকাবাসী আরও জানান, পারিবারিক কোনো কারণে সকালে শাশুড়ির সঙ্গে ডলি বেগমের সামান্য ঝগড়া হয়েছিল। হয়তো তার কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে। তারা বলেন, ডলি বেগম একটু রাগী প্রকৃতির ছিলেন। তবে তারা স্বামী মান্নানের সঙ্গে কখনো তাকে ঝগড়া করতে দেখাযায়নি। সে বিষ জাতীয় কিছু খাইয়ে অথবা বালিশ চাপা দিয়ে সন্তানদের হত্যা করে ডলি বেগম গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
গুটুদিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইজ্জত আলী বলেন, ডলি বেগমের স্বামী আব্দুল মান্নান লেকসাস গাইড কোম্পানিতে মার্কেটিং অফিসার পদে কাজ করেন। এলাকায় সবার সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক। তার স্ত্রী একটু জেদি প্রকৃতির হলেও আমি তার প্রতিবেশী হিসাবে তাকে কখনো তার স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া অথবা রাগারাগি হতে দেখিনি। তবে, কী কারণে এ রকম ঘটনা ঘটল বুঝতে পারছি না।তিনি আরও বলেন, দুপুরে মান্নানের চাচাতো ভাইয়ের বাড়িতে তাদের দাওয়াত ছিল। ছুটির দিন দাওয়াত থাকার কারণে মান্নান বাড়ি থেকে দূরেও যায়নি। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সে বাড়িতে ফিরে এসে তার স্ত্রী, সন্তানদের মৃত অবস্থায় দেখতে পায়।
গুটুদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ তুহীনুল ইসলাম তুহীন বলেন, এ রকম মর্মান্তিক একটি ঘটনা ঘটবে তা আমরা বিশ্বাস করতে পারছি না।
ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত শাহা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মা ও দুই শিশু সন্তানের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে— কী কারণে ও কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে।
খুলনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান বলেন, সবকিছু দেখে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, মা ডলি বেগম আত্মহত্যা করেছেন। তবে আত্মহত্যার আগে তিনি তার দুই শিশু সন্তানকে হত্যা করেন। এ ব্যাপারে আমরা বিস্তারিত তদন্ত করে দেখছি।
সম্পাদকঃ এম এ হালিম, মোবাইল: ০১৯১১-৪৫১৬৯৭,০১৭৮১১৫৮৯২৯ , Email- halim.nildumur@gmail.com.