নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সুন্দরবনে মধু কাটতে যেয়ে মৌয়াল আবু নেছার মন্টুর নিখোঁজের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার সাংবাদিক মিজানুর রহমানের মুক্তিসহ ইউপি সদস্য আবিয়ার রহমানের নামে হয়রানীমুলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। রোববার বেলা ১১টায় সুন্দরবন তীরবর্তী দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার ডুমুরিয়া খেয়াঘাট সংলগ্ন উপকুল রক্ষা বাঁধের উপর ঘন্টাব্যাপী ঐ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এলাকাবাসীর ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে স্থানীয়দের পাশাপাশি সহ শ্রধিক নারী ও পুরুষ বনজীবী, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণী ও পেশার মানুষ অংশ নেয়। আবু নেছার মন্টু গাজী শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের চকবারা গ্রামের মোঃ সাহাবুদ্দীন গাজী ওরফে সাবুদ আলীর ছেলে।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের বক্তব্যে দাবি করেন সুন্দরবনে প্রবেশের প্রায় দুই সপ্তাহ পর তালপট্রি এলাকা থেকে আবু নেছার মন্টুকে বাঘে ধরে নিয়ে যায়। সেসময় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ঘটনাটি বেশ গুরুত্ব সহকারে প্রচার করা হয়। দুর্গম এলাকা হওয়ার পাশাপাশি চার/পাঁচ দিন ধরে অভুক্ত সহযোগী মৌয়ালের প্রত্যেকে অসুস্থ হওয়ায় দীর্ঘক্ষণ তারা বাঘের পিছু নিতে না পেরে লোকালয়ে ফিরে আসে। বিষয়টি বনবিভাগসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা অবহিত হওয়া সত্ত্বেও প্রায় ৮ সপ্তাহ পর উদ্দেশ্যমুলকভাবে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা অভিযোগ করেন, পুর্বশত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মন্টুর বাঘে খাওয়ার সুযোগকে কাজে লাগাতে তৎপর স্থানীয় একটি মহল। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নিখোঁজ মৌয়ালের স্ত্রী সন্তানদের পাশ কাটিয়ে এক দশক ধরে এলাকার বাইরে বসবাসরত তার বিমাতা ভাইকে মামলার বাদি করা হয়েছে। এছাড়া ইউপি সদস্য আবিয়ার রহমানের ঘনিষ্ঠজন হওয়ার পাশাপাশি নানা সময়ে সংবাদ প্রকাশের ঘটনায় আগে থেকে ক্ষুব্ধ থাকার জেরে মিজানুরকে ঐ মামলায় আসামী করা হয়।
টানা বৃষ্টি ও কাঁদা উপেক্ষা করে মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা হয়রানীমুলক মামলায় গ্রেপ্তার সাংবাদিক মিজানুর রহমানের দ্রুত সময়ের মধ্যে মুক্তির দাবি জানান। এছাড়া নিখোঁজ মৌয়ালের অপর সহযোগীসহ স্ত্রী-সন্তানদের কথা বলে মামলার সত্যতা নিশ্চিতে অধিকতর তদন্ত দাবি করেন তারা।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক মিজানুর রহমানের মেয়ে ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী মাহিমা সুলতানা মিম, স্ত্রী আনোয়ারা আক্তার, নিখোঁজ মৌয়ালের স্ত্রী সফিরণ বেগম, ছেলে বাবু হোসেন, উপকুলীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল হালিম সহযোগী মৌয়াল আবু মুছা, আবুল কাশেম, আব্দুল মজিদ গাজী, মিন্নাত হোসেন, মাকসুদুল মোল্যা প্রমুখ।
জানায যায়, গত ১ এপ্রিল নয় সহযোগীর সাথে মিলে সুন্দরবনে মধু কাটতে যায় আবু নেছার মন্টু। পরবর্তীতে বেশী মধু সংগ্রহের লোভে ভারতীয় সুন্দরবনে প্রবেশের পর ১৬ এপ্রিল বিএসএফসহ সেখানকার বনরক্ষীদের ধাওয়ার মুখে মধু ও নৌকাসহ যাবতীয় সরঞ্জাম ফেলে পালিয়ে আসে তারা। অভুক্ত অবস্থায় চার/পাঁচ দিন ধরে নদী সাঁতরে ও পায়ে হেঁটে সুন্দরবনের তালপট্রি পৌছে বিশ্রামের সময় আবু নেছার মন্টুকে বাঘে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আরও দু’দিন পথে কাটিয়ে ১৯ এপ্রিল লোকালয়ে বাকি মৌয়ালরা লোকালয়ে ফিরলে তাদের সহযোগী মৌযাল আবু নেছার মন্টুকে বাঘে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
সম্পাদকঃ এম এ হালিম, মোবাইল: ০১৯১১-৪৫১৬৯৭,০১৭৮১১৫৮৯২৯ , Email- halim.nildumur@gmail.com.