বুড়িগোয়ালিনী (শ্যামনগর) প্রতিনিধিঃ
শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকা বুড়িগোয়ালিনীর ইউনিয়নের দাতিনা খালী মহসীন সাহেবের হুলো নামক স্থানে পাউবো বেড়িবাঁধের ৫ নম্বর পোল্ডারের আন্তর্গত বেড়িবাঁধে ধস নেমেছে। গত ২৩ জুন শুক্রবার সকালে অনুমানিক ২৫-২৬ ফুট বাঁধের বাইরের অংশ মালঞ্চ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ফলে বাঁধে মাটিসহ ওপরে বসানো বালুভর্তি অর্ধশতাধিক জিও ব্যাগ নদীতে ধসে পড়ে যাওয়ায় ঐ এলাকাজুড়ে ভাঙনের আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এলাকা সুত্রে জানা যায় , এই স্থানে প্রায় ভাঙন দেখা দেয়, কয়েক মাস আগে ধসে যাওয়া অংশে মাটি দিয়ে তার উপর বালুভর্তি জিও ব্যাগ বসায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কিন্তু আবার ও বাঁধের ধস নেমেছে। এলাকাবাসীর দাবী দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এই বর্ষার মৌসুমে বড় ধরনের ক্ষতিক্ষয় হতে পারে । তারা আরও বলে, পানি উন্নয়ন বোর্ড যত্রতত্র যে কাজ করেছে, সেটি শুধু অর্থ নষ্ট ছাড়া আর কিছু না । কয়েক মাস পর পর বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। সেটি আমাদের বসবাসের জন্য একেবারে হুমকি স্বরুপ।
দাতিনাখালী গ্রামের বাসিন্দা সুমন বলেন, প্রায় প্রতিবছর নদীর বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়। ফলে মাছের ঘের, বসতবাড়ি, মিষ্টি পানির পুকুর, গাছগাছালি সহ গবাদিপশু ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। আর স্থানীয়রা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিতে পড়ে।
বুড়িগোয়ালিনী গ্রামের বাসিন্দা জামিলা খাতুন বলেন, সরকার এতো এতো বাজেট দেচ্ছে তাও এই ভাঙন ঠেকাতে পারছে না। কি মেরামত করে যে বার বার ভাঙে। আমরা একটু শান্তিতে বসবাস করতেও পরাছি না। সবসময় ভয়ে থাকি কখন কি হয়।
বুড়িগোয়ালিনী গ্রামের বাসিন্দা নাঈম বলেন, ‘মাত্র পাঁচ মাস আগে ধসে যাওয়া অংশে কাজ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে সংস্কারের সময় কার্যাদেশ অনুযায়ী স্লপ বা ঢাল না রাখার কারণে, সামান্য বৃষ্টিতেই শুক্রবার একটি অংশের মাটিসহ জিও ব্যাগ নদীতে ধসে গেছে। পার্শ্ববর্তী কয়েকটি অংশেও একই ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে , ‘মূল ঠিকাদারের পরিবর্তে শ্রমিক সর্দার আইয়ুব ও পাউবোর কয়েকজন কর্মচারী ওই অংশের কাজ সম্পাদন করেছেন । মাটির কাজসহ জিও ব্যাগ প্লেসিং ঠিকঠাক না হওয়ার কারণেই মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে একই অংশে আবার ভাঙনের উপক্রম হয়েছে। সেটি মুল বরাদ্দের টাকা অনুযায়ী কাজ হয়নি।
এসব বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মাসুদ রানা বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট অংশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ অন্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাবেন। আগে থেকে প্রস্তুতকৃত জিও শিট দিয়ে ধসে যাওয়া অংশ মুড়িয়ে দেওয়া হবে, যাতে পানির ঢেউয়ের আঘাতে অবশিষ্ট অংশের মাটি নদীতে বিলীন হতে না পারে।
বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম বলেন, আমি ভাঙনের বিষয়টি শুনেছি আমার লোক ওখানে গিয়েছে খুব দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনে যত্রতত্র কাজের কারনে এলাকাবাসী বিপদগ্রস্ত, এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করছে ঐ এলাকাবাসী।