কয়রা প্রতিনিধিঃ
খুলনার কয়রা উপজেলায় একটি খালের সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে ইউপি চেয়ারম্যানের হাতে উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আক্তারুজ্জানকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে।এ বিষয়ে সার্ভেয়ার আজ বৃহস্পতিবার খুলনা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।অভিযুক্ত ওই চেয়ারম্যানের নাম জিয়াউর রহমান জুয়েল।তিনি কয়রার ১নং আমাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
অভিযোগে জানা গেছে,জেলা প্রশাসকের নির্দেশ মোতাবেক আমাদী ইউনিয়নের খেওনা খালের সীমানা নির্ধারণের দায়িত্ব পান উপজেলা প্রকৌশলী।এই কাজে সহযোগীতা করার জন্য সার্ভেয়ারকে সাথে নেন। গত সোমবার(৩ এপ্রিল) বিকেলে সরজমিন পরিদর্শনে গেলে সার্ভেয়ারকে দেখে উত্তেজিত হয়ে যান চেয়ারম্যান। এসময় তিনি অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন।একপর্যায়ে উপজেলা প্রকৌশলীর সামনে সার্ভেয়ারকে চেয়ারম্যান ও তার অনুসারীরা মারধর শুরু করেন।চেয়ারম্যান ও তার অনুসারীদের মারধরে সার্ভেয়ার আহত হন।
উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোঃ আক্তারুজ্জান বলেন,উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার আমাদী ইউনিয়নের খেওনা খালের তদন্তে সহযোগীতার জন্য আমাকে সাথে নেন।ইঞ্জিনিয়ারের সাথে উভয় পক্ষের কথা শুনছিলাম এমন সময় চেয়ারম্যান সাহেব এসে খারাপ ভাষায় আমাকে গালিগালাজ শুরু করেন।এবং আমি এখানে কেনো এসেছি তা জানতে চান।গালিগালাজের বিষয়টি প্রমাণ রাখার জন্য আমি মোবাইল ফোনে ভিডিও করতে থাকি। এটা দেখে চেয়ারম্যান সহ তার সাথে থাকা লোকজনেরা আমাকে এলোপাতাড়ি ভাবে মারতে থাকে।আমার হাতে মুখে বুকে এবং গলার মারের চিহ্ন এখনো রয়েছে।
মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল বলেন,জেলা প্রশাসক উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারের উপর খালের তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।কিন্তু তদন্তের সময় সার্ভেয়ারকে দেখে আমার মনে কেমন যেনো একটা খটকা লাগে।সার্ভেয়ারের সাথে কথোপকথনের সে ভিডিও করা শুরু করে।এই দেখে আমার অনুসারীরা সার্ভেয়ারের সাথে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। সার্ভেয়ারকে আমার কোনো লোকজনই মারপিট করেনি।
উপজেলা প্রকৌশলী দারুল হুদা জানিয়েছেন, খুলনা জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওই খালের তদন্ত করতে যাই।সহযোগীতার জন্য উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারকে সাথে নেই।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সার্ভেয়ারকে সেখানে কেন আনা হলো জানতে চান। এ সময় সামান্য উত্তেজনা দেখা দেয়। চেয়ারম্যানের লোকজন সার্ভেয়ারকে মারধর করে সেখান থেকে বের করে দিতে চেষ্টা করেন। পরে ঘটনাস্থল থেকে সকলে চলে যান। বিষয়টি ইউএনও এবং উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মমিনুর রহমান বলেন,ঘটনাটি জানার পর উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার, চেয়ারম্যান ও সার্ভেয়ারকে নিয়ে গত মঙ্গলবার আমার কার্যালয়ে বসেছিলাম।যে ঘটনা ঘটেছে খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে সার্ভেয়ার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন,এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদকঃ এম এ হালিম, মোবাইল: ০১৯১১-৪৫১৬৯৭,০১৭৮১১৫৮৯২৯ , Email- halim.nildumur@gmail.com.