সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় কন্ট্রাক্টারের গাফিলতির কারণে নির্মাণাধিন স্কুলের ছাদের উপর থেকে রড মাথায় পড়ে উষা মনি (৮) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থী নিহত
হয়েছে।
নিহত শিক্ষার্থী উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের শাহগঞ্জ শ্রীপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন মেয়ে ও শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয়
শ্রেণির ছাত্রী।
রবিবার সকাল নয় টায় উপজেলার শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটনাটি ঘটে।
এঘটনায় নির্মাণাধীন ভবনের ৭জন শ্রমিককে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে তাহিরপুর থানা পুলিশ।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিন তলা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণ কাজ চলমান। নিচ ও দ্বিতীয় তলার কাজ
শেষ হওয়ার নিচ তলায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছিল। প্রতিদিনের মত রবিবার
সকালে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আসেন। সকালে প্রতিদিনের মত স্কুলে আসে শিক্ষার্থী উষা মনি(৮)। পানি খাওয়ার জন্য শ্রেণি কক্ষ থেকে নয় টার সময় বের হলে নির্মানাধীন তিন তলা ভবনের উপর কাজ করা অবস্থায় এক শ্রমিকের হাত থেকে
একটি রড নিচে ওই শিক্ষার্থী মাথায় পরলে গুরুত্ব আহত হয়।
এসময় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী মিলে ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
প্রতক্ষদর্শীরা জানান, স্কুলের কন্ট্রাক্টার ও গ্রামের তার কিছু সহযোগিতাকারীদের সহযোগিতায় ভবন নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম করেছে পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিত না করেই কাজ করছিল এনিয়ে
আমরা বারবার বলে আসছি কিন্তু নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে কাজ চালিয়ে যায়।
কন্ট্রাক্টার ও তার নিয়োজিত লোক কোন কথাই শোনে নি। উল্টো নানান ভাবে
হুমকি ও হয়রানী করেছে আমাদেরকে। কন্ট্রাক্টার ও তার নিয়োজিত লোকদের গাফিলতির কারণে এই ঘটনাটি ঘটেছে।
শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন জানান,আমরা সকাল সাড়ে ৮টায় স্কুলে আসার পর ঐ শিশু শিক্ষার্থী নয় টার দিকে পানি খাওয়ার জন্য শ্রেণি কক্ষ থেকে বের হলে উপর থেকে রড মাথায় পরে গুরুত্ব আহত হয়। পরে হাসপাতালে যাওয়ার পথে মারা যায়।
প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এবিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
কন্ট্রাক্টার মাইন উদ্দিন জানান,এটা একটা দুর্ঘটনা। আপনি কোনো রকম নিরাপত্তা ছাড়াই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন কেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি জানান নির্মাণাধিন ভবনের নিচে ক্লাস না করার জন্য আমি নিষেধ করেছিলাম এরপরও ক্লাস করার কারণে এই
দুর্ঘটনা ঘটেছে। আপনি কাজ বন্ধ রাখতে পারতেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন আমি আমার কাজ শেষ করার জন্য কাজ চলমান রেখেছি।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ মির্জা রিয়াদ হাসান জানান, মাথায় আগাতের কারণে হাসপাতালে আসার পূর্বেই শিশুটি মারা গেছে।
তাহিরপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ ইফতেখার হোসেন জানান, নিহত স্কুল শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে
নির্মানাধীন ভবনের ৭জন শ্রমিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের হেফাজতে নিয়ে এসেছি। এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাই নি।
সম্পাদকঃ এম এ হালিম, মোবাইল: ০১৯১১-৪৫১৬৯৭,০১৭৮১১৫৮৯২৯ , Email- halim.nildumur@gmail.com.